স্বদেশ ডেস্ক;
ছেলে কাদির (২০)-এর মারধরে গতকাল শুক্রবার সকালে অসুস্থ্য হয়ে পড়েন বাবা হেলাল উদ্দিন (৬২)। প্রকাশ্যে ছেলের হাত মার খেয়ে অপমান সইতে না পেরে এদিন রাতেই মারা যান তিনি। এমন মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের নিজমাওনা গ্রামে।
নিহত হেলাল উদ্দিন গজীপুর সদর উপজেলার তেলিপারা গ্রামের বাসিন্দা। তবে শ্রীপুরের নিজমাওনা গ্রামে জমি কিনে বাড়ি করে স্ত্রী-সন্তান নিয়ে তিনি বসবাস করতেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হেলালের সঙ্গে প্রায়ই ঝগড়া হতো ছেলে কাদিরের। শুক্রবার ভোরে কাদির ঘুম থেকে উঠেই বাবার সঙ্গে ঝগড়ায় জড়িয়ে পরে। কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে সে বৃদ্ধ বাবাকে মারধর করে। পরে ছেলের বিচার চাইতে নিজমাওনা গ্রামের জাবেদ আলী মার্কেটে গিয়ে লুটিয়ে পড়ে হাউমাউ করে কাঁদতে থাকেন হেলাল। সে সময় বাজারের লোকজন কাদিরকে ডেকে আনতে লোক পাঠালেও সে স্থানীয়দের ডাকে বাজারে আসেনি।
এদিকে, স্ত্রী খোদেজা হেলালকে বাড়িতে নেওয়ার চেষ্টা করলেও ছেলের হাতে মারের ভয়ে তিনি যেতে রাজি হয়নি। এর কিছুক্ষণ পর কাদির বাজারে এসে প্রকাশ্যে লোকজনের সামনে হেলালকে পুনরায় মারধর করতে থাকে। স্বামীকে রক্ষা করতে এগিয়ে যান স্ত্রী খোদেজা বেগম। এ সময় মাকেও মারধর করে কাদির। ছেলের হাতে মারধরের অপমান সইতে পারেনি হেলাল। ঘটনাস্থলেই অসুস্থ্য হয়ে পড়েন তিনি। এদিন রাতে পার্শ্ববতী গাজীপুর বাজারের গ্রাম্য চিকিৎসক সোহরাব হোসেনের ফার্মেসিতে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেই তার মৃত্যু হয়।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক নয়ন ভূইয়া জানান, স্থানীয়দের বাধার মুখে লাশ দাফন করতে পারেনি কাদির। বাজারের লোকজন জাতীয় জরুরি পরিষেবার নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে পুলিশে খবর দেয়। শ্রীপুর থানা পুলিশ এসে রাতে নিহতের লাশ উদ্ধার করে।
লাশ ময়নাতদন্তের জন্য গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দিন আহাম্মদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ছেলে কাদির বাড়িতেই আছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্টে পেলে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।